যে পরীক্ষায় প্রশ্ন নেই- Exam (2009)

একটি কক্ষে মোট আটজন পরীক্ষার্থী। খুব কঠিন পরীক্ষা। সময়? ৮০ মিনিট। পরীক্ষক সবাইকে ওই রুমে বসিয়ে বাইরে থেকে রুম লক করে দিলেন। লেখার জন্য কাগজও দেওয়া হলো, কিন্তু প্রশ্ন নেই!

প্রশ্ন কোথায়? পরীক্ষক কোথায়? খাতায় কী লিখবো? আশেপাশে সবার সঙ্গে আলোচনা করা যাবে কিন্তু লিখবোটা কী! প্যাঁচ যে খুলছে না।

হ্যাঁ, 🎬 Exam (2009) Mystery, Thriller, Director: Stuart Hazeldine, Rating: IMDb 6.8/10 পরীক্ষার প্লট এটি।

মাত্র ৮০ মিনিটে অবিশ্বাস্য ও শ্বাসরুদ্ধ করা ৮ ক্যান্ডিডেটের জন্য একটাই পরীক্ষা। সিনেমায় একেকটা মিনিট যায়, সাসপেন্স বাড়তে থাকে।

আমাদের শিক্ষার্থী, যারা- প্রশ্ন কমন না আসা, পরীক্ষার হলে দুশ্চিন্তা, উত্তর জেনেও কনফিউশন, প্রস্তুতিহীন অসহায়; যাদের তাঁদের জন্য দারুণ একটি সিনেমা এটি।

তবে, এই সিনেমার নিষ্ঠুরতম দিক হলো, এখানে পরীক্ষক একটি নিয়ম বলে দিয়ে রুম লক করে যান। শর্তটি অমান্য করলে ‘প্রাণ হারাতে’ হবে!

করোনার অতিমারিতে বসে এই সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার শিক্ষার্থীদের দারুণ লাগবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া না নেয়া নিয়ে চলমান দ্বিধা কিছুটা দূর হবে এইভাবে ভাবলে।

আমরা জানি, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয় বছরে একবার। আর শিক্ষকবৃন্দ? তাঁদের পরীক্ষা সারাবছর ধরে চলে। শিক্ষকের দু’টি চোখ নজরদারি করে ৭০জন শিক্ষার্থীকে। সেই ৭০জন শিক্ষার্থীর ১৪০টি চোখ বছরের প্রতিটি দিন নজরদারি করে শিক্ষকদের। পরীক্ষার প্রশ্নে, ভাইবা বোর্ডে, টিউটোরিয়ালে একজন শিক্ষার্থী “কী জানে না”, তার চাইতেও বেশি জানতে চাওয়া দরকার- “কী জানে” সেটা। শিক্ষার্থীদের পক্ষে পরীক্ষার হলে বসে তিন/চার ঘণ্টায় খসখস করে উত্তর লেখা যদি কঠিন হয়, তেমনি একজন শিক্ষকের কাছে পুরো কোর্সকে একটি পাতায় গুছিয়ে যুতসই প্রশ্ন আকারে উপস্থাপন করতে পারাটাও কঠিন একটি ব্যাপার। বিশ্ববিদ্যালয় তো শিক্ষক-শিক্ষার্থী দু’পক্ষেরই বিদ্যাশিক্ষা গ্রহণের স্থান, জানতে চাওয়ার স্থান। এই ‘জানতে চাওয়া’র প্রক্রিয়ায় কোন পক্ষই যেন কখনোই জয়-পরাজয়ের স্বাদ না পায়। এখানে কেউ কারো প্রতিপক্ষ হওয়ার কথা ছিলো না।

সিনেমার শিক্ষাটি হলো, জীবনের পরীক্ষায় ‘ফার্স্ট বেঞ্চার’ ও ‘ব্যাক বেঞ্চার’ বলে আসলে কোন কিছুই নেই। ‘মিডল ব্যাঞ্চার’ বলতেও আসলে কিছু নেই। আর পরীক্ষক?

হ্যাঁ। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয় বছরে একদিন। পরীক্ষক/শিক্ষকের পরীক্ষা? প্রতিদিন!

হ্যাপি ওয়াচিং… 🙂